কলসি বাজিয়ে গান গেয়ে সংসার চালাচ্ছেন অন্ধ রাজিব( ভিডিও গান )
প্রকাশিত তারিখ : August 11, 2018 | আপডেট সময়: 11:13 AM
একটি টাকা দাও না ও ভাই একটি টাকা দাও না একশ টাকা পাঁচশ টাকা হাজার টাকা চাই না অথবা এসব দেখি কানার হাট বাজার এমনি অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়ে দর্শক শ্রোতাদের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে জীবনের ঘানি টেনে চলেছেন অন্ধ রাজিব (২৬)।
রাজিবের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার সিন্দুকাই গ্রামে। রাজশাহী ও এর আশপাশের এলাকায় তাকে সবাই গান গাওয়া রাজিব কানা নামেই চেনেন।
রাজিবের একাধিক ভক্ত জানান, গান গেয়ে কিছু আয় করতে রাজিব প্রায় ছুটে যান বাগমারার ভবানীগঞ্জ নিউমার্কেট চত্তরে। শুক্রবার হাটবার তিনি নিউমার্কেট চত্তরে ঘণ্টাব্যাপী গান গেয়ে ভালোই আয় করেন। সেখানেই গানের ফাঁকে রাজিবের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা যায় তার জীবন কথা।
প্রায় ১০ বছর যাবত এভাবে গান গেয়ে সাংসারের চালাচ্ছেন অন্ধ রাজিব। স্ত্রী, দুই কন্যা, পিতা মাতা ও ভাই বোন নিয়ে আট সদস্যের পরিবারে অন্নের জোগান দিতে হয় তাকেই। তবে তার জীবনের শুরুটা এমন ছিলনা। শৈশবে হাটাৎ টাইফয়েট জ্বরে রাজিবের দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায় এবং দুই পা ক্রমেই অবস হয়ে পড়ে। হাটাচলার সামর্থ হারিয়ে ফেলেন তিনি। পিতা-মাতার অভাবের সংসারে বড়ই বোঝা হয়ে পড়েন রাজিব। একমাত্র পথ ভিক্ষাবৃত্তি। তবে আত্মসচেতন রাজিব সে পথে পা না বাড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেন কিছু একটি করার। তার কণ্ঠস্বরও বেশ চমৎকার। তাই সিদ্ধান্ত নেন গান গেয়ে কিছু আয় রোজগার করবেন। কিন্তু বাদ্যযন্ত্র তাকে কে দেবে। তাই নিজের কন্ঠের ওপর ভরসা করে বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই গান গাওয়া শুরু করেন রাজিব। পরে গানের তাল ঠিক রাখতে একটি সিলভারের কলসি বাদ্যযন্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেন তিনি। আর এভাবেই রাজিবের গান পৌঁছে যায় দর্শকদের হৃদয়ে।
রাজিব জানান, ইউটিউবেও তার গানের ভিডিও ছাড়া রয়েছে। ইউটিউবে রাজিব কানা কলসি বাজায় এই নাম সার্চ করলেই দেখা যাবে তার গানের ভিডিও। বর্তমানে হাট-বাজারে গান গেয়ে প্রতিদিন তার পাঁচশ থেকে হাজার টাকার মত আয় হয়। এখন গান গাইতে রাজিব সিলভারের কলসির সঙ্গে যুক্ত করেছেন একটি সাউন্ড বক্স।
রাজিব জানান, এই সাউন্ড বক্স কিনতে তাকে সহযোগিতা করেছেন তানোর পৌরসভার মেয়র। মেয়রের মাধ্যমে গত বছর চট্রগ্রামের ফ’য়স লেকে একটি কনসার্টে চারটি গান গেয়ে চৌদ্দ হাজার টাকা বকসিস পান। পরে বাড়ি ফেরার পথে পাবনা থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় তিনি এই সাউন্ড বক্সটি ক্রয় করেন। সাউন্ড বক্সের শব্দ বেশি হওয়ায় এখন রাজিবের গানে বেশ দর্শক সমাবেশ ঘটে। তার গান শুনে খুশি হয়ে সবাই তাকে দশ পাঁচ টাকা বকশিস না দিয়ে খালি হাতে ফেরান না। আর এতেই কোন মতে কেটে যায় রাজিবের জীবন। তবে মাঝে মধ্যে ঝড়-বৃষ্টি বা আবহাওয়াগত কারণে গান বন্ধ থাকলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় রাজিব পারিবারকে।
আপনার মতামত লিখুন :
[প্রিয় পাঠক, আপনিও এফ টিভি নিউজ অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, রাজনীতি, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন-ftvnewsbd@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।]
Recent Post