লিমাঃ যদি টাকা দেয় তাহলে তোদের বাসর ঘরটা আমি সাজাবো। আমার অনেক দিনের শখ, কিন্তু কেউ আমাকে সাজাতে দেয় না।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। তুই আগে ম্যানেজারকে বলে দেখ।
লিমাঃ ওকে।
লিমা আমার ডেস্ক থেকে চলে গেলো। আমি অবন্তীকে কল দিয়ে কথাটা বললাম, অবন্তী শুনেই বললো।
.
অবন্তীঃ হইছে আর ঢং করতে হবে না। টাকা হাতে পেলে তারপর বলবে।
এ কথা বলে মোবাইল টা রেখে দিলো। লিমা কিছুক্ষণ পর ম্যানেজার এর রুম থেকে বের হলো….
লিমাঃ এই জুয়েল!
আমিঃ হুম বল।
লিমাঃ আমি ম্যানেজারকে বলে দিয়েছি, দেখ উনি কি বলে।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
লিমাঃ হুম ম্যানেজার হয়তো তোকে ডাকবে, যদি জিজ্ঞেস করে টাকা কেন দরকার তাহলে বলবি যে বাসার কাজ চলতেছে।
আমিঃ ওকে।
লিমাঃ আরো একটা গুড নিউজ আছে!
আমিঃ কি?
লিমাঃ আজকে সানি আসবে, আমি ওরে নিয়ে আসার জন্য যাচ্ছি।
আমিঃ সানি কে?
লিমাঃ তোর দুলাভাই, আমার হবু,,,,,
আমিঃ বাহ! বিয়ের আগেই এতো প্রেম, বিয়ের পর কি করবি?
লিমাঃ তুই আর অবন্তী যেটা করবি আমরাও সেটা করবো।
আমিঃ আমাকে একটু বলিস, তোরা কি কি করস।
লিমাঃ মাইর খাবি ফাজিল। আচ্ছা আমি গেলাম,,,,
আমিঃ ওকে, আল্লাহ হাফেজ,,,
লিমা চলে গেলো। আমি বসে বসে কাজ করতে লাগলাম, দুপুর শেষ হয়ে বিকাল হয়ে গেলো, কিন্তু ম্যানেজারের কোনো খবর নাই। আমি ভাবতেছি টাকা হয়তো দিবে না।
ছুটি হওয়ার প্রায় ২০ মিনিট আগে পিয়ন আসলো আমার কাছে।
পিয়নঃ স্যার আপনাকে ডাকছে..
আমিঃ কে?
পিয়নঃ ম্যানেজার স্যার। এখন গিয়ে দেখা করেন।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যান আমি আসছি।
এক বুক আশা নিয়ে ম্যানেজারের রুমে গেলাম,,,
আমিঃ স্যার আসবো?
ম্যানেজারঃ মি.জুয়েল! আসুন ভিতরে আসুন।
আমিঃ থেংক ইউ স্যার।
ম্যানেজারঃ হুম, বসুন।
আমি বসলাম।
ম্যানেজারঃ আপনার নাকি টাকার খুব প্রয়োজন?
আমিঃ জ্বি স্যার।
ম্যানেজারঃ কতো?
আমিঃ ৩ লক্ষ হলে হবে।
ম্যানেজারঃ এতো টাকা দিয়ে কি করবেন?
আমিঃ স্যার বাসার কাজ চলতেছে।
ম্যানেজারঃ কিন্তু মি.জুয়েল আপনি জয়েন করেছেন যে এখনো একমাস হয়নি। আমরা এই মুহূর্তে আপনাকে এতো টাকা দিতে পারি না।
আমিঃ কেন স্যার, অন্যান্য কোম্পানি গুলোতে তো যারা কর্মকর্তা তাদের কে লোন দেয়,আর মাস শেষে বেতন থেকে কেটে নিয়ে যায়। আমার ক্ষেত্রেও একই টা করিয়েন।
ম্যানেজারঃ হুম লোন দেয়, আমরাও দিই। কিন্তু সেটা পুরাতন লোকদের কে। আপনি যে এই অফিসে সারাজীবন কাজ করবেন তার কোনো গ্যারান্টি আছে?
আমিঃ সেটা না হয় ঠিক আছে, কিন্তু আমি তো আর এই মুহূর্তে চলে যাচ্ছি না। আর আমার সব কাগজপত্র আপনাদের কাছে, আপনারা ওগুলো না দিলে তো আমি অন্য কোথাও চাকরি করতে পারবো না।
আমি যদি এই অফিস থেকে চলেও যাই তাহলে আপনাদের টাকা শোধ করে তারপরেই যাবো।
ম্যানেজারঃ সেটা নাহয় বুঝলাম। কিন্তু এতো গুলো টাকার জন্য আপনাকে কিছু ডোকোম্যান্ট জমা দিতে হবে।
আমিঃ কি?
ম্যানেজারঃ আপনাদের বাড়ির কাগজপত্র, যদি কোনো কারনে আপনি টাকা না দিয়ে চলে যান আমরা আপনার বাড়ি দখল করবো।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে দিবো।
ম্যানেজারঃ হুম, আর আপনার বর্তমান বেতন ২৫ হাজার টাকা, আমরা প্রতি মাসে ৫ হাজার কেটে নিবো। বাকি ২০ হাজার পাবেন।
আমিঃ ওকে স্যার।
ম্যানেজারঃ ওকে কালকে আসার সময় বাড়ির কাগজপত্র নিয়ে আসবেন।
আমিঃ আসি স্যার।
সালাম দিয়ে বের হয়ে গেলাম। তারপর বাসায় চলে গেলাম।
রাতে বসে বসে ভাবতেছি কি করে আব্বু আম্মুকে কাগজের কথা বলবো।
খাওয়ার সময় আব্বুকে বলেই দিলাম দলিলের কথা। বাবা কিছুই বললো না খাওয়া শেষ করে আমি রুমে চলে গেলাম।
কিছুক্ষণ পর আব্বু একটা ফাইল নিয়ে আমার রুমে আসলো। আমার হাতে দিয়ে বললো….
আব্বুঃ এখানে সব কিছু আছে। আমি জানি তুই খারাপ কিছু করবি না। আমি তোকে আমানত দিলাম,,,,,,
আমি কিছুই বললাম না। ফাইলটা রেখে দিলাম। অবন্তীকে কল দিলাম। কিছুক্ষণ কথা বলে মোবাইল রেখে দিলাম।
তারপর ঘুমিয়ে গেলাম,সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে অফিসে চলে গেলাম। সোজা ম্যানেজারের রুমে গেলাম। ফাইলটা উনার হাতে দিয়ে আমি আমার ডেস্কে গিয়ে কাজ করতে শুরু করলাম।
১১ টার দিকে পিয়ন এসে ডেকে নিয়ে যায় ম্যানেজার নাকি আমাকে ডাকতেছে।
ম্যানেজার এর রুমে গেলাম। উনি আমাকে একটা চেক কেটে দিলো।
আমি তো খুশিতে শেষ। যাইহোক ম্যানেজার থেকে ১ ঘন্টার জন্য ছুটি নিলাম। নাহলে বিকালবেলা ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে। আয়মানকে কল দিয়ে আসতে বললাম তারপর আয়মান আসলো।
ওরে নিয়ে টাকা টা ব্যাংক থেকে নিয়ে আসলাম। তারপর আবার অফিসে চলে গেলাম।
কাজ শেষ করে বাসায় চলে আসলাম। রাতে অবন্তীকে কল দিলাম।
অবন্তীঃ বলেন সাহেব! সারাদিন কোনো খবর ছিলো না আপনার এখন মনে হয়েছে তাই না?
আমিঃ সরি, কাজে ছিলাম তো তাই। তুমিও তো দাও নি
অবন্তীঃ মোবাইলে টাকা ছিলো না। তোমারে তো বলেছিলাম টাকা পাঠাতে বাট তুমি তো পাঠাও নি।
আমিঃ সরি, মনে ছিলো না।
অবন্তীঃ কয়দিন পর দেখা যাবে আমি যে তোমার বউ সেটাও মনে থাকবে না।
আমিঃ সেটা ভুলবো না। আচ্ছা শোনো।
অবন্তীঃ হুম বলো।
আমিঃ কালকে বিকালে একটু দেখা করিও তোমার সাথে খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে
অবন্তীঃ কি কথা এখন বলো।
আমিঃ মোবাইলে বলা যাবে না। সরাসরি বলবো।
অবন্তীঃ আচ্ছা ঠিক আছে। খাইছো?
আমিঃ না মাত্র বাসায় আসলাম। তুমি?
অবন্তীঃ না খাবো,একটু পর। তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে যাও।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
তারপর খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ফ্রেশ হয়ে অফিসে চলে গেলাম।
এর মাঝে কয়েকবার অবন্তীকে কল দিলাম ওরে বললাম শাড়ি পড়ে আসতে।
বিকালবেলা আমাদের কলেজের সামনেই আসতে বললাম।
আমি কাজ শেষ করে সোজা কলেজের সামনে চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর অবন্তী আসলো।
আমিঃ কি ব্যাপার এতো দেরি হলো কেন?
অবন্তীঃ এই সরি সরি, আসলে শাড়ি পরতে দেরি হয়ে গেছে।
আমিঃ মানে?
অবন্তীঃ তুমি তো জানো আমি শাড়ি পড়তে পারি না। কারো না কারো হেল্প লাগে। আজকে আম্মুও বাসায় নেই মামার বাড়ি গেছে। একটা কাজিন কে বলেছিলাম আসার জন্য। সে আসতে দেরি করে ফেললো। তাই আমারও দেরি হয়ে গেলো।
আমিঃ এতো কষ্ট হলে শাড়ি পরার কি দরকার ছিলো?
অবন্তীঃ শাড়ি পড়
আপনার মতামত লিখুন :
[প্রিয় পাঠক, আপনিও এফ টিভি নিউজ অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। লাইফস্টাইলবিষয়ক ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ, নারী, ক্যারিয়ার, পরামর্শ, রাজনীতি, খাবার, রূপচর্চা ও ঘরোয়া টিপস নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন-ftvnewsbd@gmail.com-এ ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।]
Recent Post